কক্সবাজার, রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

র‍্যাবের ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন রবিবার

জঙ্গি ও রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী দমনে চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করছে র‍্যাব

রিয়াদ তালুকদার::

জঙ্গি, মাদক, সন্ত্রাসীদের অপতৎপরতা বন্ধে ২০০৪ সালের ২৬ মার্চ শুরু হয় র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন বা র‍্যাবের কার্যক্রম। বর্তমানে সারাদেশে র‌্যাবের ১৫টি ব্যাটেলিয়নে পুলিশ, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, বিজিবি, কোস্টগার্ড, আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছে।

আজ রবিবার (১৯ মার্চ) র‍্যাবের ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান হতে যাচ্ছে। উত্তরা র‍্যাব সদর দফতরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সিনিয়র সচিব আমিনুল ইসলাম।

গত ১৮ বছরের পথচলার বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চাইলে র‍্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) এম খুরশিদ হোসেন বলেন, বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ জঙ্গি এবং রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের দমন করা। মানবাধিকার সমুন্নত রেখে স্মার্ট বাহিনী র‍্যাব কাজ করে যাচ্ছে। এদেশের যেকোনও ক্রাইসিসে নিরাপত্তা, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান, জঙ্গিবিরোধী অভিযান এবং যেকোনও জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দুর্যোগে র‍্যাব সাধারণ মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাবে।

তিনি বলেন, র‍্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে মানুষ অনেক কথাবার্তা বলে। এসব বিষয় এখন আর নেই। আমরা চেষ্টা করছি র‍্যাবের প্রতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আনার।

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, র‍্যাবের কোনও সদস্য কোনও ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকলে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। এছাড়া র‍্যাবের প্রতিটি সদস্য নিজেদের সর্বোচ্চ মেধা ও দক্ষতা দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।

জঙ্গি দমন অভিযানে ২০০৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে টানা ৩৩ ঘণ্টার অভিযানে জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ-জেএমবির আমির শায়খ আব্দুর রহমানকে সিলেটের শাপলাবাগ থেকে গ্রেফতার করে র‍্যাব। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই অভিযানটি সবচেয়ে বড় সাফল্য বাহিনীটির। পরবর্তীতে গ্রেফতার করা হয় সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই, আতাউর রহমান সানিসহ বিপুলসংখ্যক জঙ্গি।

র‍্যাবের গণমাধ্যম শাখা বলছে, ২০০৪ সালের ২৬ মার্চ প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ লাখের বেশি সন্ত্রাসী এবং অপরাধীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। গত ১৮ বছরে ২৯২৯ জন জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ২০২২ সালে ১২৪টি অভিযানে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের ১৮৫ জনকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। এরমধ্যে জেএমবির সদস্য রয়েছে ২৯ জন ও জামায়তুল আনসার আল হিন্দাল শারক্বিয়ার ৬৮ জন ও কেএনএফ-এর ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে একই সময়ে ৪৫৪ জনকে গ্রেফতার করে র‍্যাব। সাইবার ক্রাইমের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ৭৯১ জনকে, ৬৭৫ জলদস্যু, ১৬০ বনদস্যু, মানবপাচারের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ১০৬৫ জন, অপহরণের অভিযোগে ৪ হাজার ৫৩৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়। নারী ও শিশু পাচারের অভিযোগে ৩১৭ জন, যৌন হয়রানি এবং ইভটিজিংয়ের অভিযোগে ৩৮১ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

এছাড়া একই সময়ে সোনা ডাকাতির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে মোট ২৭৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ধর্ষণ এবং চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলায় ৩৮৭৩ জন, ছিনতাই মলম পার্টি অজ্ঞান পার্টির ৯৮১৮ জন, দেশি-বিদেশি জাল নোট ব্যবসায়ী এবং হুন্ডি চক্রের ২১৫৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

গাড়ি চোর চক্রের ১৪৬৭ জনকে গ্রেফতার করে র্যাব। চরমপন্থি ৫০৫ জনকে, প্রতারণার অভিযোগে ৭ হাজার ৫২ জন, অবৈধ ভিওআইপি পরিচালনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ১০২৯ জন, ডাক্তার না হয়েও ডাক্তার পরিচয় বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা সেবা দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাহিনীটি ৪৩৭ জনকে গ্রেফতার করে। এছাড়া ২০৩০ জন চাঁদাবাজ, ডাকাতির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ২৬৩৯ জনকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয় বলে জানায় র‍্যাব। বাংলা ট্রিবিউন

পাঠকের মতামত: